তুরস্কের
রাজধানী আঙ্কারায় সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত রাশিয়ার
রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কার্লভের লাশ নিজ দেশে
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এরই মধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা
শেষ করে লাশ নিয়ে
যাওয়া হচ্ছে। এদিকে
১৮ সদস্যের রাশিয়ান তদন্তকারী দল এরই মধ্যে
তদন্তকাজ শেষ করেছে বলে
জানিয়েছে। দলটিও
রাশিয়ায় ফিরে যাচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে
তুরস্কে যান উচ্চপর্যায়ের তদন্তকারী
দল। তারা
ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা
পর্যবেক্ষণ এবং তুর্কি কর্মকর্তাদের
সঙ্গে কথা বলেন।
রাশিয়ার পথে নিহত
রাষ্ট্রদূতের লাশ
|
বিবিসি
ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এই খবর দিয়েছে। লাশ হস্তান্তরের আগে আঙ্কারার ইসেনবুগা
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আন্দ্রে
কার্লভর স্মরণসভা আয়োজন করা হয়। সেখানে
তাকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার
দেওয়া হয়। ওই
অনুষ্ঠানে নিহতের পরিবার, তুরস্কের
উপ-প্রধানমন্ত্রী তুগরুল টার্কিস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সোলেমান সুলি, বিভিন্ন দেশের
রাষ্ট্রদূত এবং দুই দেশের
কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে তাকে বিশেষ বিমানে
রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। আন্দ্রে
কার্লভকে বিদায় জানাতে হাজার
হাজার মানুষ বিমানবন্দরে জমায়েত
হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে তুর্কি উপ-প্রধানমন্ত্রী
বলেন, সন্ত্রাসীরা আন্দ্রে কার্লভকে হত্যা করলেও তিনি
কূটনৈতিক ইতিহাসে উৎসর্গিত হয়েছেন। কেননা,
দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক
স্থাপনে কার্লভ বলিষ্ঠ ভূমিকা
রেখে গেছেন।
প্রসঙ্গত,
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কার্লভকে সোমবার গুলি করে
হত্যা করা হয়।
একটি আর্ট গ্যালারি পরিদর্শনে
গিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সেখানে দাঙ্গা
পুলিশের একজন সদস্য তাকে
গুলি করে হত্যা করে।
ছবিতে
দেখা গেছে, রুশ রাষ্ট্রদূত
যখন বক্তব্য রাখছিলেন তখন তার পেছনে
ওই পুলিশ দাঁড়িয়েছিলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারী রাষ্ট্রদূতকে লক্ষ্য করে অন্তত
আটটি গুলি ছুঁড়েছে।
তবে হত্যাকারী তখন দায়িত্বরত ছিলো
না। তুর্কী
সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, এসময়
তিনি ছুটিতে ছিলেন।
তার পরনে ছিলো স্যুট
ও টাই।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তুর্কী পুলিশ
সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের
মধ্যে হত্যাকারী পুলিশের পরিবারের ছয়জন সদস্য।
হামলার
পরপরই ২২ বছর বয়সী
বন্দুকধারী মেভলুত মের্ট আটিলিন্টাস
হাত উঁচু করে তার
পিস্তল উপরে তুলে ধরে
সিরিয়ায় রাশিয়ার ভূমিকা, বিশেষ করে আলেপ্পো
শহরে রুশ হামলার, প্রতিবাদ
জানাচ্ছিলো। এসময়
সে আরবি ও তুর্কী
ভাষায় চিৎকার করে বক্তব্য
রাখছিলো।
হামলাকারী আল্লাহু
আকবর বলে চিৎকার করে
বলতে থাকে, ‘আলেপ্পোকে ভুলে
যাবেন না। ভুলে
যাবেন না সিরিয়ার কথাও’।
এই হত্যাকাণ্ডের পর রাশিয়া তার
দূতাবাসগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে অতিরিক্ত
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।
তুর্কী
প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, রাশিয়ার সাথে তুরস্কের সম্পর্ক
নষ্ট করার জন্যেই রুশ
রাষ্ট্রদূতের ওপর এই হামলা। হামলাকারী
এই পুলিশের সাথে কোনো গ্রুপের
যোগাযোগ আছে কীনা এ
বিষয়ে এখনো স্পষ্ট করে
কিছু জানা যায়নি।
হত্যাকাণ্ডের
পরপরই রাশিয়া এবং তুরস্ক দুটো
দেশের পক্ষ থেকেই এর
নিন্দা জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও তুর্কী প্রেসিডেন্টের
মতো বলেছেন, দুটো দেশের সম্পর্ক
নষ্ট করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে
রুশ রাষ্ট্রদূতকে হত্যা করা হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment