নতুন প্রাথমিক পাঠ্যবইগুলোর হাজারো ভুলত্রুটি, চার বছর আগে প্রাথমিকের
পাঠ্যবইগুলো প্রথম প্রকাশের পর
সরকার এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম
ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রশংসা
কুড়িয়েছিল। কিন্তু
প্রতিবছর একটু একটু করে
পরিমার্জন করা হয়েছে, সঙ্গে
ভুল ও অসংগতিও বেড়েছে। পঞ্চম
বছরে এসে ভুলের পাশাপাশি
বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে নতুন
কিছু সংযোজন-বিয়োজন নিয়ে।
নতুন প্রাথমিক পাঠ্যবইগুলোর হাজারো ভুলত্রুটি |
প্রাথমিকের
পাঁচটি শ্রেণিতে মোট বইয়ের সংখ্যা
ইংরেজি ভার্সনসহ ৫৬। এ
বছর প্রাথমিক স্তরের জন্য ছাপা
হয়েছে প্রায় ১২ কোটি
বই, যা বিনা মূল্যে
শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া
হয়েছে। এর
মধ্যে বাংলা বইগুলোতে পরিবর্তন
বেশি, ভুলভ্রান্তিও অনেক। ঢাকার
কয়েকটি বিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষকের সহায়তা
নিয়ে এবং বইগুলো নানাভাবে
পর্যালোচনা করে প্রাথমিকের ভুলত্রুটিগুলো
চিহ্নিত করা হয়েছে।
তবে প্রতিবেদনে কেবল উল্লেখযোগ্য ভুলগুলো
তুলে ধরা হয়েছে।
তৃতীয়
শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ের
৫৮ পৃষ্ঠায় ‘আমাদের জাতির পিতা’
শীর্ষক লেখায় বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের মায়ের নাম লেখা
হয়েছে ‘সায়েরা বেগম’।
এটা হবে ‘সায়েরা খাতুন’।
প্রথম
শ্রেণির বাংলা বইয়ের শেষ
লেখাটি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে। ১৬
লাইনের লেখায় কবে মুক্তিযুদ্ধ
হয়েছে, কবে দেশ স্বাধীন
হয়েছে, কার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ
হয়েছে, এর উল্লেখ নেই। লেখাটি
পড়ে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস
সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়
না।
প্রাথমিক
শিক্ষার পাঠ্যসূচি যৌথভাবে পর্যালোচনা করা নিলুফার বেগম
ও ফোরকান আহমদ প্রথম
আলোকে বলেন, প্রথম শ্রেণির
শিশুর উপযোগী বর্ণনা ওই লেখায়
নেই। তা
ছাড়া তথ্যহীন এই লেখায় মুক্তিযুদ্ধ
নিয়ে শিশুরা কী শিখবে?
প্রাথমিক
ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে
বলেন, পাঠ্যবইয়ের সব ভুলত্রুটি ঠিক
করে সংশোধনী দেওয়া হবে।
এ জন্য একটি কমিটি
কাজ করছে। এক
প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন,
বইয়ের মান কতটা খারাপ
হয়েছে, কেন খারাপ হয়েছে,
সেগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি ভালো
করার সব চেষ্টা করা
হবে। আগামী
বছর আর ভুলত্রুটি থাকবে
না।
লেখকের
নাম, জন্মতারিখ ও জন্মস্থান
পঞ্চম
শ্রেণিতে কাজী নজরুল ইসলামের
জন্মতারিখ লেখা হয়েছে ২৫
মে, এটা হবে ২৪
মে। সেখানে
আগস্ট বানানে ‘ষ্ট’ দেওয়া হয়েছে। একই
বইয়ে জসীমউদ্দীনের নামের মাঝখানে
স্পেস দেওয়া হয়েছে, যা
ভুল। সুকুমার
রায়ের পরিচিতিতে জন্মসাল থাকলেও তিনি কোথায়
জন্মগ্রহণ করেছেন, তার উল্লেখ নেই। বইয়ের
৪০ পৃষ্ঠায় কান্তজির মন্দির নির্মাণের সাল
উল্লেখ আছে ১৯৫২, এটা
হবে ১৭৫২।
নজরুলের
‘সংকল্প’ কবিতায় পাঁচটি ভুল
পঞ্চম
শ্রেণিতে জাতীয় কবি কাজী
নজরুল ইসলামের ‘সংকল্প’ কবিতায় অন্তত পাঁচটি
ভুল রয়েছে। প্রথম
লাইনে আছে, ‘থাকব না
কো বদ্ধ ঘরে’।
এটা হবে ‘থাকব নাকো
বদ্ধ ঘরে’। আরেক
লাইনে আছে, ‘পাতাল ফেড়ে
নামব নিচে’। এটি
হবে, ‘পাতাল ফেড়ে নামব
আমি’। আরেকটি
লাইন, ‘উঠব আবার আকাশ
ফুঁড়ে’। এটা
হবে, ‘উঠব আমি আকাশ
ফুঁড়ে।’ বিশ্বজগৎ-এর মাঝখানে হাইফেন
(-) দেওয়া হয়েছে। ঠিক
দুই পৃষ্ঠা পরে আবার
হাইফেন ছাড়াই বিশ্বজগৎ লেখা
আছে।
কবিতার
প্রথম লাইনে ভুল
তৃতীয়
শ্রেণির বাংলা বইয়ে কুসুমকুমারী
দাশের বহুল পরিচিত ‘আদর্শ
ছেলে’ কবিতায় কয়েকটি লাইন
বিকৃত হয়ে গেছে।
কবিতার প্রথম লাইনে বলা
আছে, ‘আমাদের দেশে সেই
ছেলে কবে হবে’।
এটা হবে, ‘আমাদের দেশে
হবে সেই ছেলে কবে’। এ
ছাড়া ‘মানুষ হইতে হবে’। এটা
পাল্টে লেখা হয়েছে ‘মানুষ
হতেই হবে’। এক
জায়গায় ‘চায়’ কে ‘চাই’
হিসেবে ছাপা হয়েছে।
কবিতায় কবির লেখা আরও
কয়েকটি শব্দ পাল্টে ফেলা
হয়েছে। বইয়ে
‘আমাদের গ্রাম’ গল্পে অনুশীলনীতে
গাঁয়ের শব্দটি ভুলভাবে গায়ের
লেখা হয়েছে। দ্বিতীয়
শ্রেণির বাংলা বইয়ে আছে
‘ধরনী’। এই
শব্দে দন্ত্য-ন স্থলে
মূর্ধন্য-ণ হবে।
শিক্ষার
শুরুতেই ধাক্কা
প্রথম
শ্রেণির ২০১৩ ও ২০১৭
সালের বই দুটি হাতে
নিয়ে দেখা যায়, এটিকে
পর্যায়ক্রমে নষ্ট করা হয়েছে। বইয়ের
প্রথম ছড়া ‘আতা গাছে
তোতা পাখি’। ২০১৩
সালে চার লাইনের এই
ছড়া নিয়ে এক পৃষ্ঠার
অলংকরণ ছিল দৃষ্টিনন্দন।
২০১৭ সালে একই রকম
ছবি আঁকার অনর্থক চেষ্টা
হয়েছে, পৃষ্ঠার নিচের দিকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে
আম, বাদুড় ও বকের
ছবি দেওয়া হয়েছে।
বইজুড়ে এভাবে ছবি ও
অলংকরণ নষ্ট করা হয়েছে।
প্রথম
শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’-এর ১১ পৃষ্ঠার
চারটি ছবির কথা আসছে
ঘুরেফিরে। শিশুদের
শেখানোর জন্য অজ, অলি,
আম ও আতার ছবি
দেওয়া হয়েছে। এ
সম্পর্কে একাধিক শিক্ষক ও
গবেষকের মত হচ্ছে, চারটি
ছবির একটিও যথার্থ হয়নি।
সেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘আদর্শলিপি’ থেকে শুরু করে
এ পর্যন্ত ‘অ’ দিয়ে অজগর
সাপ শেখানো হয়।
কিন্তু ভয়ংকর বিবেচনায় সাপ
দেওয়া ঠিক হবে না
বলে মত আসে।
তাই অজগরের বদলে অ
বর্ণ দিয়ে অপ্রচলিত ‘অজ’
ও ‘অলি’ শব্দ দেওয়া
হয়।
একজন শিক্ষক বলেন, ‘অজ’
মানে ছাগল। কিন্তু
স্নাতক পাস করা অনেকেও
‘অজ’ শব্দের মানে জানেন
না। তা
ছাড়া যে ছাগলের ছবি
দেওয়া হয়েছে, সেটি দেশি
ছাগল নয়। আবার
ছাগল আমগাছে ওঠে না,
এটা ভুল বার্তা।
তা ছাড়া সাধারণত এত
ছোট আমগাছে আম হয়
না। আমের
ছবিও বোঝা যাচ্ছে না। একটা
কিশোর গাছ থেকে আম
পেড়ে খেতে পারে।
কিন্তু একটা ছাগল গাছ
থেকে আম ছিঁড়ে খাচ্ছে,
এমন ছবি বেমানান।
একই অবস্থা অলি শব্দেরও,
এর মানে মৌমাছি।
বইয়ে মৌমাছির যে ছবি দেওয়া
আছে, তা দেখে একটি
অচেনা পোকা মনে হয়।
প্রাথমিকের
পাঠ্যবই পর্যালোচনার সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশ
উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী পরিচালক নিলুফার বানু প্রথম আলোকে
বলেন, প্রথম শ্রেণির একজন
শিক্ষার্থীকে মৌমাছি না অলি,
ছাগল না অজ—কোনটা
শেখানো উচিত, সেই বিবেচনা
যথার্থ হয়নি। তাঁর
মতে, ‘ও’ দিয়ে ওড়না
শেখাতে হবে কেন? তা
ছাড়া একটি শিশুকে যেভাবে
ওড়না পরানো হয়েছে, তা
স্বাভাবিক মনে হওয়ার কারণ
নেই।
ছবির মান প্রতিবছর খারাপ
হচ্ছে
শিক্ষা
বিশেষজ্ঞ ও গবেষকেরা বলছেন,
শিশুদের বইয়ে বিষয়বস্তুর সঙ্গে
ছবির সম্পর্ক থাকা জরুরি।
২০১৩ সালে নতুনভাবে ছাপার
আগে প্রাথমিকের বই হাতে নিলেই
বিরক্তির সৃষ্টি হতো।
দীর্ঘ সমালোচনা ও দাবির পর
সরকার ভালো কাগজ ও
উন্নত মলাটে চার রঙের
বই দেওয়া শুরু করে।
২০১৩ সালে চার রঙে
প্রাথমিকের নতুন বই প্রথম
ছাপা হয়। তখন
টুকটাক ভুল ধরা পড়লেও
ওই বইয়ের ছবিগুলো ছিল
দৃষ্টিনন্দন। কিন্তু
ক্রমান্বয়ে পরিবর্তন ও পরিমার্জন হতে
হতে ছবির মান তলানিতে
এসে ঠেকেছে। এখন
পাঠ্যবইয়ের বেশির ভাগ ছবির
আকার ও আকৃতি অস্পষ্ট।
বইয়ে শিল্প সম্পাদক হিসেবে
রয়েছে শিল্পী হাশেম খানের
নাম। দায়বদ্ধতার
প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘২০১৩
সালের পর থেকে এনসিটিবি
তাদের ইচ্ছামতো ছবি ও অলংকরণ
পরিবর্তন করেছে। একটিবারের
জন্যও তাদের মনে হয়নি,
শিল্প সম্পাদক হিসেবে আমার নাম
ব্যবহার করছে, আমাকে অন্তত
জিজ্ঞাসা করা উচিত।
অনুপাতহীন ছবি এবং ভুল
ছবি দিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের
বিভ্রান্ত করেছে।’
হাশেম
খান আরও বলেন, বিনা
মূল্যে বই দেওয়া সরকারের
একটা ভালো অর্জন, এটাকে
বিনষ্ট করার জন্য এনসিটিবির
ভেতর থেকে কেউ ষড়যন্ত্র
করছে বলে মনে হয়।
প্রথম
শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে অসংলগ্ন ছবি রয়েছে বেশ
কয়েকটি। তৃতীয়
পৃষ্ঠায় একটি শ্রেণিকক্ষের ছবি
দেওয়া আছে। প্রতিটি
শিশুর সামনে ব্যাগভর্তি বইয়ের
স্তূপ। প্রথম
শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীর সামনে
এত বই থাকার কথা
নয়। ‘এ’
দিয়ে একতারা এবং ‘ঢ’
দিয়ে ঢাক দেখাতে চাইলেও
সেগুলো তা নয়।
২০ পৃষ্ঠায় একটি বককে আমগাছে
বসানো হয়েছে। কিন্তু
সাধারণত বক থাকে খাল-বিল বা জলাশয়ে। এই
চিত্রই অধিক পরিচিত।
একই পৃষ্ঠায় বলা আছে, ‘মগ
ডালে ময়না দোলে’।
কিন্তু ময়না পাখিটি মগডালে
নয়, গাছটির মাঝামাঝি বসানো
হয়েছে। ৩৬
পৃষ্ঠায় শিশুর হাতে বন্দুক
দেওয়া আছে, সে শিকারে
যাচ্ছে। একদিকে
বন্দুক, আরেকদিকে শিকার। দুটি
বিষয় প্রথম শ্রেণির শিশুর
উপযোগী কি না, তা
নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বইয়ে মৃগছানা ও উটের ছবিগুলো
দিয়ে ওই প্রাণী বোঝায়
না। বইয়ের
বিভিন্ন পাতা ভৌতিক ও
অবাস্তব ছবিতে ভরপুর।
‘ইসলাম
শিক্ষা’র বর্ণনা নিয়ে
প্রশ্ন
চতুর্থ
শ্রেণির ‘ইসলাম ও নৈতিক
শিক্ষা’ বইয়ের ৮৪ পৃষ্ঠায়
লেখা হয়েছে, ‘তাঁর স্ত্রী সারা
(রা)কে তাঁদের পুত্র
ইসহাকের জন্মের সুসংবাদ দেন। ওই
সময় ইবরাহীম (আ)-এর বয়স
ছিল ৯০ বছর এবং
সারা (রা) ছিলেন বন্ধ্যা।’ ইসলাম
শিক্ষার কয়েকটি বই পর্যালোচনা
করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, প্রজনন
বা বন্ধ্যত্ব বিষয়ের এই বর্ণনা
শিশুমননের উপযোগী নয়।
পরিবেশের
বর্ণনা ইসলাম শিক্ষায়
পঞ্চম
শ্রেণির ‘ইসলাম ও নৈতিক
শিক্ষা’ বইয়ে পরিবেশ ও
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিষয়ে চার পৃষ্ঠার
বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে। তৃতীয়,
চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে
‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইগুলোতে
পরিবেশ ও প্রকৃতি সম্পর্কে
বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
প্রায় একই ধরনের বর্ণনা
পঞ্চম শ্রেণির ‘ইসলাম ও নৈতিক
শিক্ষা’ বইয়ে দেওয়া হয়েছে। খোন্দকার
ইব্রাহিম খালেদ বলেন, সমাজপাঠের
অন্তর্ভুক্ত পরিবেশ ও প্রাকৃতিক
দুর্যোগ ইসলাম শিক্ষা থেকে
বাদ দেওয়া আবশ্যক।
হার্ট
ও রিপাবলিক
প্রাথমিকের
ইংরেজি বইয়ের পেছনে ‘...বাই
দ্য গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ’ লেখা। এটা
‘গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপলস
রিপাবলিক অব বাংলাদেশ’ হওয়ার
কথা। তৃতীয়
শ্রেণির ‘হিন্দু ধর্ম শিক্ষা’
বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় লেখা
হয়েছে DO NOT HEART
ANYBODY। এটা হবে HURT।
আরও কিছু অসংগতি
তৃতীয়
শ্রেণির ‘ইসলাম ও নৈতিক
শিক্ষা’ বইয়ের ১৯ পৃষ্ঠায়
সালাত সম্পর্কে বর্ণনায় সাত লাইনে ১০
বার আছে এই (সালাত)
শব্দটি। কিন্তু
একবারও বলা হয়নি যে
ওই শব্দটির মানে নামাজ।
পঞ্চম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’-এর ১৩ পৃষ্ঠায়
চিতা বাঘের বর্ণনা দিতে
গিয়ে বলা হয়েছে, ‘এক
প্রকার বাঘ। অন্য
বাঘের সঙ্গে চিতাবাঘের পার্থক্য
চিতাবাঘ অন্যান্য বাঘের চেয়ে দ্রুত
দৌড়াতে পারে ও গাছে
উঠতে পারে।’ এখানে
বাক্যটি ত্রুটিপূর্ণ। যতিচিহ্ন,
বিরামচিহ্নসহ টুকটাক অসংখ্য ভুল
রয়েছে বিভিন্ন বইয়ে। বিশেষ
করে বিখ্যাত লেখকদের মূল লেখার সঙ্গে
অনেক ক্ষেত্রেই মিল নেই।
তবে লেখক, গবেষক ও
প্রকাশকেরা বলছেন, এসব ঘটনার
জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত
করে শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। সৃজনশীল
প্রকাশকদের নেতা ওসমান গণি
প্রথম আলোকে বলেন, এনসিটিবি
বইয়ের কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে করতে না পারলে
আউটসোর্সিং করতে পারে।
তাঁর মতে, এ ধরনের
প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতাই নিয়োগের প্রথম শর্ত হওয়া
উচিত, যেটি সবচেয়ে কম
গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এখানে কারা, কীভাবে আসেন,
কত দিন থাকেন—সেসব
বিষয় পর্যালোচনা হওয়া প্রয়োজন।
জানতে
চাইলে শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
প্রথম আলোকে বলেন, তিনটি
কারণে এ ধরনের অবস্থা
তৈরি হয়; নিজ দায়িত্ববোধের
অভাব, প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ক্ষমতা, তদারকি বা ব্যবস্থাপনায়
ঘাটতি এবং জবাবদিহির অভাব। এ
ছাড়া রাজনীতিকরণ হলে যোগ্যরা সঠিক
জায়গায় বসতে পারেন না,
তাঁদের কাজের মূল্যায়নও হয়
না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই অধ্যাপকের মতে,
জাতীয়ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ এই কাজে ভুল-ভ্রান্তি দূর করতে প্রয়োজনে
বাইরের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিতে হবে। সম্পাদক
ও সংকলকদের ওপরে আর কোনো
উচ্চতর সম্পাদক রাখা চলবে না
এবং সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদেরই দায়বদ্ধ করতে হবে।
ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
মনে করেন, শুদ্ধিপত্র বা
সংশোধনী দেওয়াটা কোনো সমাধান নয়,
পাঠ্যবই নির্ভুল করতে হবে।
0 comments:
Post a Comment