সাফল্যের একমাত্র রঙিন আঁচড়টা মাহমুদ উল্লাহর, নিউজিল্যান্ড
সফরে চারটি ম্যাচ খেলে
ফেলল বাংলাদেশ। তিনটি
ওয়ানডে, একটি টি-টোয়েন্টি। ওয়ানডে
সিরিজের কোনো ম্যাচ থেকেই
ইতিবাচক কোনো বার্তা আসেনি। ব্যাটিং
ধস, এলোমেলো বোলিংয়ের সঙ্গে দল নির্বাচন
নিয়ে বিতর্ক এবং তা
নিয়ে দেশে বসে বিসিবি
সভাপতির মন্তব্যের জের ধরে গোটা
ছবিটাই ছিল হতাশার।
নেপিয়ারে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও
৬ উইকেটে হার এবং
সেটা ম্যাচ শেষের ১২
বল আগে, খেলার ধরন
বিচারে এটাও হতাশাজনক ফল। হতাশার
ধূসর ক্যানভাসে সাফল্যের একমাত্র রঙিন আঁচড়টা মাহমুদ
উল্লাহর।
সাফল্যের একমাত্র রঙিন আঁচড়টা মাহমুদ উল্লাহর |
ওয়ানডে
সিরিজটা কেটেছিল দুঃস্বপ্নের মতো, তিন ইনিংসে
করেছিলেন মাত্র ৪ রান। প্রথম
টি-টোয়েন্টিতে সেই দুঃসময়কে পেছনে
ফেলে চাপের মুখে ৪৭
বলে ৫২ রানের ইনিংস। তাতে
দলের হার ঠেকানো হয়তো
যায়নি, কিন্তু হারিয়ে ফেলা
আত্মবিশ্বাসটা ঠিকই ফিরে পেয়েছেন
বিশ্বকাপে জোড়া সেঞ্চুরি করা
মাহমুদ।
ওয়ানডে
ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংসটা নিউজিল্যান্ডে, স্বাগতিকদের বিপক্ষেই খেলেছিলেন মাহমুদ। তাই
বছর দেড়েকের মাথায়, ফের যখন
নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ, তখন প্রত্যাশাটা তাঁর
কাছেই সবচেয়ে বেশি।
ওয়ানডেতে তিনিই হতাশ করলেন
সর্বোচ্চ মাত্রায়। তিন
ইনিংসে রান ছিল যথাক্রমে
০, ১ ও ৩। খেলাটা
টি-টোয়েন্টিতে বদলে যেতেই সেই
দুঃসময়কেও পেছনে ফেললেন বিপিএলের
সেরা খেলোয়াড়। এবারে
ছিলেন খুলনা টাইটানসের নেতৃত্বে। মাঝারি
মানের দলটাকে একা হাতেই
বলতে গেলে তুলে এনেছিলেন
শিরোপার লড়াইতে।
টপ
অর্ডারের দ্রুত বিদায় তাই
অভাবিত কিছু মনে হয়নি
তাঁর, চাপের মুখে ভালো
খেলার অভ্যাসটা ধরে রেখেই ৪৭
বলে ৫২ রানের ইনিংস। তাতে
করে দল না জিতলেও
পেয়েছিল লড়াইয়ের পুঁজি। টানা
হারের মধ্যেও মাহমুদের রানে
ফেরাটা যেমন দলের জন্য
স্বস্তির, তেমনি ‘ব্যাডপ্যাচ’ কাটায়
খুশি মাহমুদও, ‘বরাবরই বলি, দলের
জন্য ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং কোনো
একটা কিছু করতে পারলে
ভালো লাগে। ওয়ানডেতে
কিছুই করতে পারিনি।
পরশু ক্রিজে বেশ কিছুটা
সময় কাটাতে পেরেছি বলে
আগের চেয়ে একটু ভালো
লাগছে। ’ নেপিয়ারের
উইকেটে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতায় জানালেন,
‘নতুন বলে টেনিস বল
বাউন্স ছিল।
বল
পুরনো হওয়ার পর ব্যাট
করাটা সহজ হয়ে যায়। এই
মাঠে ১৫-২০ রান
কম হয়ে গেছে আমাদের
ইনিংসে। ’ তাতেও
বোলাররা বেশ চেপে ধরেছিলেন
প্রতিপক্ষকে, কিন্তু রানের চাপ
না থাকায় আলগা হয়ে
যায় ফাঁসটা। আর
শেষ পর্যন্ত দল না জেতায়
সব ব্যক্তিগত অর্জনই যে ম্লান!
তবে জয়ও অধরা থাকবে
না, আশাবাদী মাহমুদ, ‘ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড
খুব ভালো দল।
আমরা কাছাকাছি যাচ্ছি, তার পরও সুযোগগুলো
কাজে লাগাতে পারছি না। তাদের
হারানোর শক্তি ও সামর্থ্য
আমাদের আছে। ’ তবে
সে জন্য শুধু নিজের
বা কারো একার নৈপুণ্য
নয় বরং গোটা দলকেই
জ্বলে উঠতে হবে, ‘ছোট
ছোট কিছু ভুল আর
ফাঁকফোকর থেকে যাচ্ছে যেগুলো
কাটিয়ে উঠতে পারলেই আমরা
জিতব বলে বিশ্বাস করি। দল
হিসেবে যদি পারফর্ম করতে
পারি, তাহলেই আমরা জিতব। এ
মুহূর্তে আমাদের মূল লক্ষ্য
দল হিসেবে পারফর্ম করা। ’
নেপিয়ারকে
পেছনে ফেলে বাংলাদেশ দল
চলে এসেছে তাওরাঙ্গায়, উঠেছে
হোটেল ট্রিনিটি হোয়ার্ফে। মিনিট
দশেক দূরত্বের মাউন্ট মঙ্গানুইতে হবে
সিরিজের বাকি দুটি টি-টোয়েন্টি। তাওরাঙ্গাতে
৩০০’র মতো বাংলাদেশি
আছেন, বেশির ভাগই মাঠে
যাবেন খেলা দেখতে।
সেই সুবাদে এই সিরিজে
শেষ দুটি টি-টোয়েন্টিতেই
সবচেয়ে বেশি দর্শক সমর্থন
পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের এই অংশটাকে বলা
হয় ‘বে অব প্লেন্টি
রিজিওন’ বা প্রাচুর্যের উপসাগর। নিউজিল্যান্ডে
আসা ব্রিটিশ অভিযাত্রী ও নাবিক ক্যাপ্টেন
কুক দিয়েছিলেন এই নাম।
প্রাচুর্যের উপসাগরে এসে প্রচুর রান
কি করতে পারবেন বাংলাদেশের
ক্রিকেট অভিযাত্রীরা?
0 comments:
Post a Comment